গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান যেভাবে খুঁজে পান এক বাঙালি
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান রুম্মিন-দেই বা লুম্বিনীর হাতে আঁকা ম্যাপ
অমিতাভ ভট্টশালী
বিবিসি নিউজ বাংলা, কলকাতা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
জানুয়ারি মাসের ২৩ তারিখ, ১৮৯৮ সাল। ব্রিটিশ
ভারতের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ আর অউধের মুখ্য বাস্তুকার সি ডব্লিউ উডলিং ও ফৈজাবাদের
কমিশনার ভিনসেন্ট স্মিথের নির্দেশ পেয়ে লক্ষ্ণৌ থেকে নেপালের তরাই অঞ্চলের দিকে রওনা
দিলেন পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী।
তিনি সেই সময়ে উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের
পুরাতত্ত্ব বিভাগে কাজ করতেন। সেটা ছিল ওই বিভাগে তার দ্বিতীয়বার যোগদানের পর্ব।
পুরাতত্ত্ব বিভাগে প্রথম পর্বে যে পুরাতত্ত্ববিদ
ড. এ ফুহয়ারের সহকারী ছিলেন মি. মুখার্জী, তারই অনুযোগে সেবারের চাকরী হারিয়েছিলেন
পূর্ণচন্দ্র। অথচ, সেই পুরাতত্ত্ববিদেরই এক ‘আবিষ্কার’ নিয়ে উপরমহলে গুরুতর সন্দেহ
হওয়ায় চাকরি হারাতে হয় ড. ফুহয়ারকে। আর সেই তথাকথিত আবিষ্কারের সত্যতা যাচাইয়ের এবং
সঠিক তথ্যানুসন্ধানের দায়িত্ব পড়ে পূর্ণচন্দ্র মুখার্জীর ওপরে।
ফৈজাবাদের কমিশনার ভিনসেন্ট স্মিথ মি. মুখার্জীকে
দায়িত্ব দেন প্রাচীন কপিলাবস্তু এবং গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনী উদ্যানের সঠিক
অবস্থান খুঁজে বার করার।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মি. স্মিথের লেখা ভূমিকা
সহ মি. মুখার্জীর জমা দেওয়া রিপোর্ট বই আকারে ১৯০১ সালে প্রকাশ করে আর্কিওলজিকাল সার্ভে
অফ ইন্ডিয়া।
বইটি ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ওয়েবসাইটে
আপলোড করে রেখেছে।
বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে বা শুনতে পারেন
বৌদ্ধ পর্যটকরা বাংলাদেশে আসছে না কেন১৯ এপ্রিল
২০১৮
বুদ্ধের ভিক্ষাপাত্র ফেরৎ চায় বিহার২৯ অগাস্ট
২০১৩
হামলার ১০ বছর পর রামুতে দুই সম্প্রদায়ের
মধ্যে সৌহার্দ্যের পরিবেশ কি ফিরেছে?২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
পুরাতাত্ত্বিক পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী
অভিযান যেভাবে শুরু
‘আ রিপোর্ট অন আ ট্যুর অফ এক্সপ্লোরেশান
অফ দ্য অ্যান্টিকুইটিস ইন দ্যা তরাই, নেপাল দ্য রিজিওন অফ কপিলাবস্তু’ শীর্ষক ওই বইতে
মি. মুখার্জী লিখেছিলেন, “কোনও বিরতি না নিয়ে একটানা পথ চলে নেপালি তরাইয়ের সদর শহর
তৌলিভা-তে পৌঁছই আমি। পরের দিন নিগলিভা-এ গিয়ে মেজর ওয়াডেলের সঙ্গে দেখা করি। আমার
অগ্রসর হওয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেওয়া হয় সরকারি আদেশ অনুসারে। আমি গোরখপুরে ফিরে
আসি।
“সরকারের কাছ থেকে নতুন একটি টেলিগ্রাম পেয়ে
আমি আবার নেপালের দিকে রওনা দিই এবং তেসরা ফেব্রুয়ারি থেকে তিলাউরাকোট অঞ্চলে খনন
কাজ শুরু করি এবং আশাপ্রদ ফলাফল পেতে শুরু করি। ছয় তারিখে আমি সাগরওয়াতে ধ্বংসাবশেষ
দেখতে যাই, যেটাকে ড. ফুহয়ার কপিলাবস্তু বলে চিহ্নিত করেছিলেন। আমি নিরাশ হই কারণ ওটা
কপিলাবস্তু হতে পারে না। নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারি তিলাউরাকোটই বুদ্ধের পিতার
শহর হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি,” লিখেছিলেন পূর্ণ চন্দ্র মুখার্জী।
পূর্ণচন্দ্র মুখার্জীর কপিলাবস্তু খুঁজে বার করার সরকারি রিপোর্ট
তিলাউরাকোটের খননকার্য
হঠাৎই মেজর ওয়াডেল সব খনন কাজ বন্ধ করে দেন,
কদিনের মধ্যেই সেই নির্দেশ আবার পাল্টিয়ে যায়।
এই পর্যায়ে তিলাউরাকোট আর চিত্রা-দেই অঞ্চলে
বড়মাপের খনন কাজ শুরু করেন মি. মুখার্জী।
“মি. ভিনসেন্ট এ স্মিথের নির্দেশ অনুযায়ী আমি
১১ই মার্চ রুম্মিন-দেই-র দিকে রওনা দিয়ে পরের দিন সেখানে পৌঁছই,” সরকারের কাছে জমা
দেওয়া রিপোর্টে লিখেছিলেন মি. মুখার্জী।
তার ভাষায়, “জঙ্গল সাফ করে বড় ঢিপিটা নিবিড়ভাবে
পরীক্ষা করে দেখার পরে নেপালি কুলিদের খনন শুরু করতে কাজে লাগাই। খননের শুরুতেই আশার
আলো দেখতে পাই। বেরিয়ে আসে বেশ কিছু ধ্বংসাবশেষ। তিলৌরা এবং চিত্রা-দেইয়ের থেকে কম
সাফল্য নয় এটা। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যা পাওয়া যায় খনন করে, তার মধ্যে ছিল মায়াদেবীর
মন্দির। ভিতের ইঁটগুলোতে সুন্দর কারুকাজ করা ছিল। বেশ কিছু ছোট স্তূপ আর অন্যান্য
নিদর্শনও বেরিয়ে আসে।“
রুম্মিন-দেই বা লুম্বিনীর যে ধ্বংসস্তুপ দেখেছিলেন পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী
রুম্মিন-দেই কি লুম্বিনী?
বৌদ্ধ বর্ণনায় লুম্বিনী উদ্যানই হল এই রুম্মিন-দেই।
ওই অঞ্চলে সম্রাট অশোকের স্থাপিত একটি স্তূপে খোদাই করা শিলালিপিতে জায়গাটিকে লুম্মিনী
বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
মাগধী ভাষায় লিখিত ওই শিলালিপি দেখে পূর্ণচন্দ্র
মুখার্জী এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে রুম্মিন-দেই প্রাচীন লুম্মিনী বা লুম্বিনী।
মি. মুখার্জীর ঊর্ধ্বতন কর্তা ভিনসেন্ট স্মিথ
তার ভূমিকায় লিখেছিলেন, “রুম্মিনি নামটার সঙ্গে লুম্বিনী বা লুম্মিনীর সাযুজ্য রয়েছে।
ওই শিলালিপি মাগধী ভাষায় লেখা, যে ভাষায় শব্দের শুরুতে বা মাঝে ‘র’ থাকলে সেটা সংস্কৃতে
‘ল’ হয়ে যায়।
হিউয়েন সাং-এর বর্ণনা অনুযায়ী উদ্যানের পাশ
দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে একটি ছোট নদী প্রবাহিত হত, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘রিভার অফ অয়েল’
অর্থাৎ তেলের নদী বলা হত। এখন ওই নদীর নাম তিলার নদী।
বুদ্ধের জন্ম-বৃক্ষের দক্ষিণ দিকে একটি স্নান
করার পুকুর ছিল, ওই বৃক্ষ থেকে যার দূরত্ব ফা হিয়েনের বর্ণনায় ২০ লি আর হিউয়েন সাংয়ের
বর্ণনায় ২৫ লি। জন্ম-বৃক্ষের ভাস্কর্যগুলি ২৫ লি দূরেই এখনও দেখা গেছে।"
‘লি’ প্রাচীন চৈনিক দূরত্ব মাপার একক। সাধারণভাবে
এক ‘লি’ ৫০০ মিটার বা এক মাইলের এক তৃতীয়াংশের সমান।
এছাড়াও হিউয়েন সাংয়ের লেখায় সম্রাট অশোক স্থাপিত
যে স্তূপের কথা রয়েছে, সেটিও খুঁজে পান মি. মুখার্জী।
এই চারটি প্রমাণের ওপরে ভিত্তি করেই মূলত সঠিক
ভাবে খুঁজে পাওয়া যায় গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানটি।
ভিনসেন্ট স্মিথ লিখেছিলেন যে গৌতম বুদ্ধের
জন্মস্থান যে এটিই, সেটা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হল।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান হিসাবে যে রুম্মিন-দেই
বা লুম্বিনী নিশ্চিতভাবেই প্রমাণিত হলেও ভারতের উত্তরপ্রদেশের পিপরাওয়া-ও দাবী করে
যে সেখানেই জন্মিয়েছিলেন গৌতম বুদ্ধ।
এই জায়গাটি নেপাল এবং তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের
সীমান্তের খুবই কাছে অবস্থিত। সেখানেও বৌদ্ধ ধর্মের অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। সেই এলাকাগুলিতে নিজে গিয়েওছিলেন পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী।
ওইসব নিদর্শনের বেশ কিছু সেই সময়ে কলকাতা মিউজিয়াম,
যার নাম তখন ছিল ‘কলিকাতা পুরাদ্রব্যালয়’-তে রাখা হয়েছিল। সেই মিউজিয়ামই বর্তমানে ইন্ডিয়ান
মিউজিয়াম।
চীনা পরিব্রাজকদের বর্ণনা অনুযায়ী কিছু মিল
পিপরাওয়াতে পাওয়া গেলেও অমিল ছিল অনেকই।
তাই পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী এবং তার ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা ভিনসেন্ট এ স্মিথ নিশ্চিত হয়েছিলেন যে প্রাচীন কপিলাবস্তু ছিল নেপালের তিলাউরাকোটের
রুম্মিন-দেইতেই।
কপিলাবস্তু খুঁজে বার করতে চলছিল খনন কার্য
সামান্য অর্থ, খারাপ যন্ত্রপাতি
তরাই অঞ্চলের অভিযান সম্পূর্ণ করে পূর্ণচন্দ্র
লক্ষ্ণৌতে ফিরে আসেন এপ্রিল মাসের পাঁচ তারিখ।
নিজের রিপোর্টে পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী লিখেছিলেন,
“আমার সর্বশেষ অভিযানে সার্ভে আর ড্রয়িংয়ের যন্ত্রপাতি বেশ খারাপ ছিল। ছবি তোলার যন্ত্রপাতিও
ছিল পুরণো আর সেগুলো ঠিকঠাক কাজও করছিল না, যার ফলে আমার কাজে খুবই সমস্যা তৈরি হয়েছিল।"
তাকে মাত্র একজন ড্রাফটসম্যান দেওয়া হয়েছিল
পরের দিকে।
“নেপাল সরকারের তরফ থেকে যে দলটিকে আমার সঙ্গে
দেওয়া হয়েছিল, তাতে একজন ক্যাপ্টেন ছিলেন (ভীমসেন ছত্রি) আর ১২ জন পাহাড়ি খননকারী।
মাঝে মাঝে সমতল অঞ্চল থেকে কিছু লোক এনে সাহায্য করা হত,” ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কিছুটা
অনুযোগের সুরেই লিখেছিলেন মি. মুখার্জী।
কপিলাবস্তু আর লুম্বিনী উদ্যানে গৌতম বুদ্ধের
জন্মস্থান নিখুঁত ভাবে বর্ণনা শুরু করার আগে তিনি লিখেছিলেন এই অভিযানের খরচ সম্বন্ধে।
“গত বছরের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ২০০০ টাকা বেঁচেছিল।
এবছর দেওয়া হয় আরও ৮০০ টাকা। সব মিলিয়ে এই খনন কাজের জন্য মোট ২৮০০ টাকা নেপালের দরবার
থেকে দেওয়া হয়েছিল। খরচ হয় ৩০০ টাকা।"
"আমার হিসাব মতে ২৫০০ টাকা এখনও রয়ে গেছে,
যাতে পরের বছরের অভিযান এবং খনন কাজও চালানো যেতে পারে,” লিখেছেন পূর্ণ চন্দ্র মুখার্জী।
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যু
পূর্ণচন্দ্র মুখার্জীর আদি বাস ছিল কলকাতা
লাগোয়া পাণিহাটিতে। সেটি তখন ছিল গ্রাম। আদি বাসস্থানে যে বসতবাড়িটি করেছিলেন পূর্ণচন্দ্র
মুখার্জী, তার নামও ছিল ‘কপিলাবস্তু ভবন’।
পাণিহাটির স্থানীয় ইতিহাসের গবেষক ও শিক্ষক
কৃশানু ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন পূর্ণচন্দ্র মুখার্জীর জন্ম হয় ১৮৪৯ সালে। তার বাবা কালিদাস
মুখার্জী কাজ করতেন কলকাতার টাঁকশালে।
“পূর্ণচন্দ্র পড়তেন আগরপাড়া মিশনারি স্কুলে।
মেধাবী এবং সাহসী হওয়া সত্ত্বেও লেখাপড়ার দিকে তার বিশেষ নজর ছিল না। কেবলমাত্র ইতিহাস,
ভূগোল ও মানচিত্রে তিনি বন্ধুদের থেকে এগিয়ে ছিলেন,” জানাচ্ছেন কৃশানু ভট্টাচার্য।
তার কথায়, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি
যে ম্যাট্রিকুলেশান এবং পরে লক্ষ্ণৌয়ের ক্যানিং কলেজ থেকে এফ.এ পাশ করেছিলেন, সেই
তথ্য আমি পেয়েছি। কিন্তু তিনি সম্ভবত স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় পাশ করতে পারেন নি।
কারুকার্য করা ইঁট, যা ঢিপি খুঁড়ে বের করেছিলেন পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী
তবে সারাজীবনই তিনি বিভিন্ন ধরণের সরকারি চাকরি
করে গেছেন। কখনও অউধ-রোহিলাখণ্ড রেলওয়েতে চাকরি করেছেন, আবার লক্ষ্ণৌ মিউজিয়ামে যোগ
দিয়েছেন। সেখান থেকেই সরকারি অর্থানুকূল্যে তাকে মুম্বাইয়ের জেজে স্কুল অফ আর্টে চিত্রাঙ্কন
শিক্ষার জন্য পাঠানো হয়। দুবছর পরে ফিরে এসে আবারও লক্ষ্ণৌ মিউজিয়ামেই যোগ দেন তিনি।
তার সম্বন্ধে বিশদে জানতে যখন মি. ভট্টাচার্য
লক্ষ্ণৌ মিউজিয়ামে গিয়েছিলেন, সেখানে কোনও তথ্যই তিনি পাননি। তার সম্বন্ধে সব তথ্যই
টুকরো টুকরো করে নানা জায়গা, বিভিন্ন পুরণো পত্রপত্রিকা থেকে যোগাড় করতে হয়েছে।
“সেই সময়ে পুরাতত্ত্ব বিভাগটি সরকারের পূর্ত
দপ্তরের অধীনে ছিল। পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী ১৮৮২ সালে পুরাতত্ত্ববিদ হিসাবে কাজে যোগ
দেন। তিন বছর পরে পুরাতত্ত্ব বিভাগের জন্য পূর্ণচন্দ্রের জন্য একটি বিশেষ পদ তৈরি করেন
তৎকালীন ছোটলাট স্যার আলফ্রেড লায়েন্স।
কিন্তু ড. ফুহয়ারকে সেই পদে নিয়োগ করা হয়।
পূর্ণচন্দ্রকে তার সহকারী হিসাবে নিয়োগ করা হয়,” বলছিলেন মি. ভট্টাচার্য। কিছুদিনের
মধ্যে ড. ফুহয়ারের চক্রান্তে চাকরি যায় মি. মুখার্জীর।
কিন্তু ১৮৮৬ সালে পূর্তবিভাগের অধীনে কাজ করার
সময়েই বুন্দেলখণ্ড এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালান।
কপিলাবস্তু খুঁজে বার করার আগে পূর্ণচন্দ্র
পাটলিপুত্র বা বর্তমানের পাটনা অঞ্চলে, এবং সান্দালপুর, বাঁকিপুর, বুলন্দবাগ আর নবরতনপুর
এলাকাতে মৌর্যযুগ এবং বৌদ্ধ মন্দির, অশোক স্তম্ভের ধ্বংসাবশেষ আর মাটির ১২ ফুট নীচে
একটি বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বার করেন।
তার এই সব প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদন
ইন্ডিয়ান এন্টিকুয়ারি পত্রিকার নভেম্বর-ডিসেম্বর ১৯০২ এবং জানুয়ারি ১৯০৩ সালে প্রকাশিত
হয়েছিল। এর আগে ১৮৯৬ সালে একবার ও ১৯০৩ সালে দ্বিতীয়বার কলকাতা মিউজিয়ামে পুরাতত্ত্বাধ্যক্ষের
দায়িত্ব নেন।
পূর্ণচন্দ্র মুখার্জীর যে দুটি বাংলা রচনা
পাওয়া যায়, তার একটি এই কলকাতা মিউজিয়াম নিয়ে।
প্রবাসী পত্রিকায় সেই লেখা ছাপা হয়েছিল।
রচনার নাম ছিল ‘কলিকাতা পুরাদ্রব্যালয়’। মিউজিয়ামের
পুরাতত্ত্ব বিভাগের বিভিন্ন অংশের নাম, সেখানে কী ধরণের সংগ্রহ আছে, সেইসব বিস্তারিত
লিখেছিলেন তিনি।
অন্য যে বাংলা রচনাটি পাওয়া যায় পূর্ণচন্দ্র
মুখার্জীর সেটি একটি ‘বীরকাব্য’। তার একটি অংশই ছাপা হয়েছিল ১৮৭৫ সালে।
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ১৯০৩ সালের চৌঠা অগাস্ট
রাত তিনটে নাগাদ পানিহাটির বাসভবন ‘কপিলাবস্তু ভবন’-এই রক্ত আমাশয়ে আক্রান্ত হয়ে মারা
যান পূর্ণচন্দ্র মুখার্জী।
![]() |
গৌতম বুদ্ধ যেখানে জন্মিয়েছিলেন, সেই রুম্মিন-দেই মন্দির ও সংলগ্ন পুকুর, বর্তমানে |
0 Comments